সেপ্টেম্বর থেকে ইউটিউভ, ফেসবুক সরকারি নিয়ন্ত্রণে || Tech News

দেশের সার্বভৌমত্ব ও সামাজিক মূল্যবোধ পরিপন্থী ইউটিউভ, ফেসবুক কিংবা গুগল থেকে সরিয়ে ফেলতে আর বিদেশী কতৃপক্ষের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবেন। বাংলাদেশ এই সক্ষমতা অর্জন করতে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা । আশা করছেন আগামী সেপ্টেম্বর মাস নাগাদ বাংলাদেশ এই সক্ষমতা অর্জন করবে এবং তা প্রয়োগে সমর্থ্য হবে। এই সক্ষমতা অর্জন করলে ফেসবুক, ইউটিউবের মত কনটেন্ট শেয়ারিং সাইটে কেউ আপত্তিকর মন্তব্য বা ভিডিও দিলে তা বাংলাদেশ থেকে আর দেখা যাবে না, তবে দেশের বাইরে থেকে তা দেখা যাবে।

কিভাবে এটা সম্ভব হচ্ছে?

‘সাইবার থ্রেট ডিটেকশন এ্যান্ড রেসপন্স’ নামে ১৫৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্পে বাংলাদেশ এই সক্ষমতা অর্জনের কাজ করে যাচ্ছে। এই প্রকপ্লের আওতায় ইতিমধ্যে ২২ হাজার পর্ণ সাইট এবং ২৫০০ গ্যাবলিং সাইট বন্ধ করা হয়েছে। এছাড়া প্রতিনিয়ত পর্যবেক্ষনে শনাক্ত হওয়া আরো কিছু পর্ণ সাইট বন্ধের প্রক্রিয়া চলমান আছে। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তর।

কিভাবে কাজ হচ্ছে?

রাজধানীর তেজগাঁও শিল্প এলাকায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তরে স্থাপন করা হয়েছে পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রয় কেন্দ্র। এই নিয়ন্ত্রয় কেন্দ্রের সাথে যুক্ত করা হয়েছে ৩টি ন্যাশনাল ইন্টারনেট এক্সচেঞ্জ ও ২৯ টি ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে প্রতিষ্ঠানকে। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হয়ে গেলে তা দেখভালের দায়িত্ব পালন করবে বিটিআরসি।
আগে কিভাবে কাজ হতো?
আগে কোন সাইট বন্ধ করতে হতে, সেই সাইটের অ্যাড্রেস পাঠাতে হতো আইআইজি অপারেটরদের কাছে। তখন তারা প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নিয়ে সাইট বন্ধ করে দিত। কিন্তু এখন সাইট বন্ধ করতে আর আইআইজি প্রতিষ্টানগুলোর দারস্থ হেত হচ্ছেনা এবং কি কোন সাইটগুলো বন্ধ হচ্ছে তা তাদের জানারও বাহিরে থাকছে। কোন সাইট বন্ধ করার পর তা যেন ভিপিএন ব্যাবহার করেও দেখা না যায় সেই ব্যাবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।

এ ব্যাপারে একজন কর্মকর্তা বলেন, 
ওয়েবসাইট বন্ধ ও তা বিকল্প পথে চালুর চেষ্টা নিয়ে টম অ্যান্ড জেরি গেম চলছে এবং তা চলবেই। তবে এ ক্ষেত্রে বিকল্প পথ তৈরি করতে যদি একদিন লাগে তাহলে তা বন্ধ করতে লাগবে ১০ মিনিট।

এই পকল্প নিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তফা জব্বার বলেন, 
গত ১৭ মাসে আমি লক্ষ্য করেছি গুগল, ফেসবুক আমাদের সাথে কথা বলতেই রাজি হতো না। পরে আমরা হার্ড লাইনে যাওয়ার পর তারা এখন কথা শুনতে চায়, আলোচনায় বসে। সবশেষ ওয়াদা করেছে তারা বাংলাদেশের আইনকেউ গুরুত্ব দিবে। তবে ওরা যে শব্দটি নিয়ে আমাদের বেশি ভোগায় তা হলো কমিউনিটি গাইডলাইন। ওদের কমিউনিটি গাইডলাইন আর আমাদের কমিউনিটি স্ট্যার্ন্ডাড এক না। এ কারনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার করে গালি দিলেও সেটা হয় ফ্রিডম অব পিচ। আর এই ফ্রিডম অব পিচের নামে আমাদের এখানে যেটা বেশি হয় তা হলো সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদের পক্ষে প্রচার ও সন্ত্রাস তৈরি করার ব্যাবস্থা। ফলে কোন বিষয়ে রিকোয়েস্ট পাঠালে ওদের কমিউনিটি স্ট্যার্ন্ডাডের সাথেই মিললেই ব্যাবস্থা নেয় নয়ত না। ফলে আমাদের যেট মনে হয়েছে ওদের উপর ভরসা করে চললে নিরাপদ ইন্টারনেট বহাল রাখা কঠিন। সে জন্য আমরা এই প্রকল্পটি গ্রহণ করি। এটি বাস্তবায়নের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে অন্তত আমরা যেন আমাদের নিজ এলাকায় নিরাপদ থাকতে পারি। ওয়েবসাইটগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি আর কমেন্টস, স্ট্যাটাস ও ভিডিও লেভেলে সুনিদিষ্টভাবে অ্যাড্রেস করার কাজ চলছে।

আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে প্রকল্পটি পুরোপুরি বাস্তবায়ন হবে বলে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন।
তথ্যসূত্র: কালের কন্ঠ।

Comments