সরকার ১৯৫টি ফেসবুক অ্যাকাউন্টের তথ্য চেয়েছে

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে তথ্য চেয়ে অনুরোধের সাড়া দিয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ১৪৯টি অনুরোধে মোট ১৯৫টি অ্যাকাউন্টের তথ্য চেয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে।তার মধ্যে আইনি প্রক্রিয়ায় তথ্য চাওয়া হয়েছে ১৯টি অ্যাকাউন্টের আর জরুরী প্রয়োজনে সরকারের পক্ষ থেকে ১৩০টি অ্যাকাউন্টের তথ্য চাওয়া হয়েছে। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ অনুরোধকৃত অ্যাকাউন্টগুলোর ৪৪ শতাংশ তথ্য দিয়েছে বাংলাদেশ সরকারকে। খবর প্রথমআলোর।
গত বৃহস্পতিবার ট্রান্সপারেন্সি প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। ট্রান্সপারেন্সি প্রতিবেদন মূলত প্রতি ৬ মাস পর পর প্রকাশ করে ফেসবুক। এই প্রতিবেদনে উল্লেখ্য করা হয়ে থাকে, কোন দেশের সরকার ফেসবুকের কাছে কী ধরনের অনুরোধ জানায় সে সম্পর্কে। তবে এই প্রতিবেদনে কোন কোন অ্যাকাউন্টের তথ্য চাওয়া হয় তা উল্লেখ্য করা হয়না।

কত শতাংশ তথ্য সরবরাহ করা হয়েছে?

ফেসবুকের এবারের ট্রান্সপারেন্সি প্রতিবেদন বলছে, সরকারের জরুরী প্রয়োজনে করা অনুরোধের অ্যাকাউন্টগুলোর ৪৮ শতাংশ তথ্য সরবরাহ করা হয়েছে এবং আইনি প্রক্রিয়ার জন্য করা অনুরোধের অ্যাকাউন্টের ১৬ শতাংশ তথ্য সরবরাহ করেছে ফেসবুক। এবার বাংলাদেশ থেকে একটি কনটেন্ট ব্লক করারও অনুরোধ পেয়েছিলো ফেসবুক কতৃপক্ষ তা তাদের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। অবৈধ ছদ্মবেশের অভিযোগ থাকায় ঐ ভিডিও কনটেন্ট বাংলাদেশে দেখানো বন্ধ করে দেয় ফেসবুক।

কোন দেশে কত সময় ফেসবুক বন্ধ ছিলো?

এবারের এই প্রতিবেদনে ইন্টারনেট সেবার বিঘ্ন হওয়ার ঘটনাও উঠে এসছে। গতবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বরে বাংলাদেশে ২২ ঘন্টা ফেসবুক বন্ধ করা হয়েছিলো, বলা হয়েছে প্রতিবেদনে। ৯টি দেশে মোট ৫৬ বার এবং বছরের প্রথমদিকে ৮টি দেশে ৪৮ বার ইন্টারনেট বন্ধের ঘটনা ঘটেছিলো।

কবে প্রথম বাংলাদেশ থেকে তথ্য চাওয়া হয়?

সর্বপ্রথম ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে বাংলাদশে সরকারের পক্ষ থেকে ফেসবুকের কাছে তথ্য চেয়ে অনুরোধ করা হয়েছিলো, এবং ফেসবুক কর্তৃপক্ষ সেই অনুরোধে সাড়াও দিয়েছিলো। এই প্রতিবেদনটি ঐ বছরের ২৮ এপ্রিল প্রকাশ করে যাতে ২০১৫ সালের জুলাই মাস থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত তথ্য চাওয়া হয়েছিলো। ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত মোট ১৫২টি অনুরাধে তথ্য চাওয়া হয়েছিলো। তার মধ্যে ১৩৪টি জরুরী বাকিগুলো আইনি অনুরোধ। এতে ২০৫ জন ব্যাবহারকারীর তথ্য চাওয়া হয়েছিলো। পরের ৬ মাসে সেই অনুরোধ কমে দাড়ায় ১৪৯টি।

কোন দেশ সবচেয়ে বেশি অনুরোধ করেছে?

ফেসবুক তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ্য করেছে, তার বিশ্ব থেকে তথ্য চেয়ে সরকারের কাছ থেকে অনুরোধ ৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির একজন শীর্ষ  কর্মকর্তা বলেছেন তথ্য চাওয়ার দিক থেকে সবার উপরে রয়েছে যুক্তরাষ্ট এবং তার পরেই রয়েছে ভারত।

কেন ট্রান্সপারেন্সি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়?

কেন ট্রান্সপারেন্সি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয় সে সম্পর্কে ফেসবুক গত বৃহস্পতিবার এই প্রতিবেদন প্রকাশ করার সময় বলেছে, ফেসবুককে স্বচ্ছ রাখার স্বার্থেই তারা এই প্রতিবেদন প্রতি ৬ মাস অন্তর অন্তর প্রকাশ করে।

ফেসবুক ইন্ট্রিগ্রিটি বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট গাই রোজেন বলেন:
গত বছরের শেষ ৬ মাসে বৈশ্বিক পর্যায়ের সরকারি অনুরোধ ১ লাখ ৩ হাজার ৮১৫টি থেকে বেড়ে ১ লাখ ১০ হাজার ৬৩৪টিতে দাঁড়িয়েছে। ব্যাবহারকারীদের তথ্য চাওয়ার অনুরোধের দিকে সবার উপরে রয়েছে যুক্তরাষ্ট, ভারত, জার্মানি ও ফ্রান্স। এছাড়াও স্থানীয় আইন অনুসারে কনটেন্ট দেখানোর বাধ্যবাধকতা ১৩৫ শতাংশ বেড়েছে। গত বছরের ৬ মাসে কনটেন্ট দেখোনো বন্ধ করার অনুরোধ ১৫ হাজার ৩৩৭টি থেকে ৩৫ হাজার ৯৭২টিতে দাঁড়িয়েছে।
আরো পড়ুন:
৩০০ কোটির বেশি অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেছে ফেসবুক
সেপ্টেম্বর থেকে ফেসবুক, ইউটিউভ সরকারি নিয়ন্ত্রণে
ফেসবুকের লাইভ স্ট্রিমিং নতুনভাবে
কি হয়েছিলো আপওর্য়াক এবং সার্চ ইংলিশ ফেসবুক গ্রুপগুলোর সাথে?

Comments